দ্বঈফ হাদীসের উপর আমল করা মুস্তাহাব

দ্বঈফ হাদীসের উপর আমল করা মুস্তাহাব। দ্বঈফ বা দুর্বল হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য তাতে মুহাদ্দিসীনগন ঐকমত্য পােষণ করেছেন । ইলমে হাদিসের এ নীতিমালাটি এখানে এ জন্য উল্লেখ করা হলো কারন আহলে হাদিসগন দ্বঈফ হাদিসের উপর আমল করা বৈধ নয় বলে উল্লেখ করেছে।<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ এ বিষয়ে আহলে হাদিসে ইমা নাসিরুদ্দিন আলবানীর একটি গ্রন্থ উল্লেখযােগ্য, এটি বাংলায় প্রকাশ করা হয়েছে এবং নাম রাখা হয়েছে "সহীহ হাদীছের পরিচয় ও হাদিস বর্ণনার মূলনীতি"। বইটির ২৩ পৃষ্ঠায়, ও ২৫ পৃষ্ঠায়, এবং ২৭ পৃষ্ঠায় আলবানী দিখেছে যে দ্ঈফ সনদের হাদিসের উপর ভিত্তি করে কোন ক্রমেই আমল করা যাবে না। (নাউজুবিল্লাহ্)<br /> <div> <br /></div> দলিল নং ১-২ঃ<br /> <br /> দ্বঈফ হাদিস আমল যোগ্য তাঁর ব্যাপারে হানাফি মাযহাবের অন্যতম ইমাম কামালুদ্দীন ইবলে হুমাম বলেন,<br /> হাকিম  رضي الله عنه স্বীয় কিতাব (মুস্তাদরাক) হুযুর ﷺ থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন, “যদি তােমাদের অন্তর চায় যে, তােমাদের নামায কবুল করা হােক, তবে তােমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তিই যেন ইমাম হন"। আলােচ্য হাদিস সহিহ হলে তাে ভাল, অন্যথায় হাদিসটি দ্বঈফ বানােওয়াট নয়, আর দ্বঈফ হাদিস অনুযায়ী আমল করা যাবে, আমল বা ফজিলত প্রমাণের ক্ষেত্রে এমন হাদিস অবশ্যই দলীল।<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ  আল্লামা কামাল উদ্দীন ইবনে হুমাম : ফতহুল কাদীর, ১/৩৪৯, অধ্যায়, ইমামত, দারূল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।<br /> <br /> দলীল নং ৩ঃ<br /> ইমাম সৈয়দ আবু তালেব মক্কী  رضي الله عنه  রচিত গ্রন্থ ‘কুউয়াতুল কুলুব’ কিতাবে লিখেন,<br /> "এমন কিছু বিষয়, যেগুলোর কারনে হাদিস বর্ণনাকারীকে দুর্বল এবং তাঁদের বর্ণিত হাদিসমূহকে সহিহ নয় বলে ঘোষনা দেওয়া হয়।সম্মানিত ফিক্বহ বিশারদগন ও ওলামায়ে কেরাম সেগুলোকে দ্বঈফ হাদিস বলার যোগ্য কিংবা ত্রুটিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করেন না।যেমন বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ না থাকা বা অপরিচিত হওয়া।কারন এমন ও হতে পারে যে,বর্ণনাকারী নিজেই তাঁর নাম গোপন করেছেন।নিজেকে প্রকাশ ও প্রচারে উৎসুক না হওয়ার বিষয়ে শরীয়তে প্রামানিক দলিল আছে।অথবা এজন্য তিনি অপরিচিত হয়েছেন যে,তাঁর ছাত্র সংখ্যা কিংবা অনুসারী খুবই নগন্য।ফলে ব্যাপকহারে মানুষ  তাঁর থেকে হাদিস বর্ণনা করার সুযোগ পাননি।<br /> <div> <br /></div> দলিল নং ৪ঃ-<br /> আল্লামা মুফতি আমিমুল ইহসান  رضي الله عنه  বলেন,দূর্বল হাদিস যদি কাল্পনিক না হয় যদিও তা একক রাবী কর্তৃক বর্ণিত হয়ে থাকে, তবু ফযীলতর বেলায় তার উপর আমল করা মুস্তাহাব। তবে শরীয়তের বিধান প্রয়ােগের ক্ষেত্রে এ হাদিস কার্যকর হবে না। হ্যা, তবে সতর্কতার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জোর প্রকাশের জন্য দুর্বল হাদিসকেও দলীল হিসেবে পেশ করা যেতে পারে।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ<span style="font-family: sans-serif;"> ১)আল্লামা মুফতী আমিমুল ইহসান : মিযানুল আখবার, পৃ-১৫ </span><br /> <div style="font-family: sans-serif;"> <br /></div> <br /> দলীল নং- ৫-৬ ইমাম আযম আবু হানিফা رضي الله عنه  মত সম্পকে বলা হয়ে থাকে,<br /> “ইমাম আবু হানিফা  رضي الله عنه এ মত দৃঢ়ভাবে পােষণ করেছেন যে, দুর্বল হাদিস কিয়াসী রায় অর্থাৎ নিজস্ব মতামত থেকে অনেক উত্তম।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ ১)<span style="font-family: sans-serif;">মুফতি আমিমুল ইহসান : মিযানুল আখবার, পৃ-১৫</span><br /> <span style="font-family: sans-serif;"><br /></span> <br /> <div style="font-family: sans-serif;"> ২).ইবনে হাজার মক্কী, আল খায়রাতুল হিসান, ২৭পৃ.মিশর হতে প্রকাশিত। </div> <div style="font-family: sans-serif;"> <br /></div> দলীল নং- ৭<br /> বিশ্ববিখ্যাত ফতােয়াবিদ এবং মুহাদ্দিস ইমাম ইবনে আবেদীন শামী  رضي الله عنه ফতােয়ায়ে শামীর ১ম খন্ড  এ লিখেন,“আরিফ কুল সম্রাট ইমাম শা’রানী رضي الله عنه বলেন, নিশ্চয় চার মাযহাবের ইমামগণ বলেছেন সহিহ হাদিস হলাে আমাদের মাযহাব। কিন্তু ফাযায়েল আমলের জন্য দ্বঈফ বা দুর্বল হাদিস আমল করা যায়েজ। যা আমি কিতাবুত ত্বাহারাত অধ্যায়ে বিস্তারিত আলােচনা করেছি।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ <span style="font-family: sans-serif;">ইমাম ইবনে আবেদীন শামী: ফতােয়ায়ে শামী, পৃ-১/৩৮৫ , কিতাবুল আযান, দারুল ফিক, ইমিয়্যাহ, বয়রুত,লেবানন।</span><br /> <span style="font-family: sans-serif;"><br /></span> • দলীল নং- ৮<br /> বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী <span style="font-family: sans-serif;"> </span><span style="font-family: sans-serif;">رضي الله عنه</span><span style="font-family: sans-serif;"> </span> উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারীর মুকাদ্দামায় দ্বঈফ হাদীসের বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ওলামায়ে কেরামের নিকট দ্বঈফ হাদিস ওয়াজ ও কাহিনীর জন্য এবং ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য।"<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ  আলামা বদরুদ্দীন আইনী : উমদাতুল কারী, শরহে বুখারী : ১/৯ পৃ:<br /> <br /> দলীল নং- ৯-১০<br />  বিশ্ববিখ্যাত মুফাসির, মুহাদ্দিস, ফকিহ আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী   رضي الله عنه "তাফসীরে রুহুল বায়ানে” বলেন,<br /> -“তবে মুহাদ্দিসীনে কিরাম এ ব্যাপারে ঐকমত্য পােষণ করেছেন যে, আকর্ষণ সৃষ্টি ও ভীতি সঞ্চারের বেলায় দ্বঈফ হাদিস অনুযায়ী আমল করা জায়েয।” | তিনি কিতাবের অন্যস্থানে বলেন,“এই অধম আরজ করছি যে, ওলামায়ে কেরাম থেকে আমলের ব্যাপারে দ্বঈফ হাদিস গ্রহণযােগ্য। ব্যাপারটি বিশুদ্ব সূত্রে বর্ণিত আছে।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ ১)  <span style="font-family: sans-serif;">আলামা ইসমাঈল হাক্কী : রুহুল বায়ান, ২/৪১০ পৃ:</span><br /> <span style="font-family: sans-serif;">২)আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী : তাফসীরে রুহুল বায়ান, ৭/পূ-২২৯ </span><br /> <span style="font-family: sans-serif;"><br /></span> দলীল- ১১ - আল্লামা ইমাম আবু তালিব মক্কী رضي الله عنه বলেন,<br /> -“ফাযায়েলে আমল এবং সাহাবাদের  رضي الله عنه বা কারও ফযীলত বর্ণনার ক্ষেত্রে মুহাদ্দিসগণ একমত এই যে, তা যে প্রকারের হােক না কেন সেটা গ্রহণযােগ্য ও গৃহীত। যদিও তা সনদ অসংযুক্ত অথবা মুরসাল হয়, তার বিরােধীতা করা বা খন্ডন করা যাবে না। এমনকি পূর্ব যুগের ইমামগণ এরুপই করেছেন।<br /> তথ্যসূত্রঃ  <span style="font-family: sans-serif;">আল্লামা আবু তালিব মক্কী : কুউয়াতুল কুলুব : ১/৩০১পৃ:</span><br /> <span style="font-family: sans-serif;"><br /></span> দলিল-১২-আল্লামা ইমাম নববী <span style="font-family: sans-serif;"> </span><span style="font-family: sans-serif;">رضي الله عنه,</span>  বলেন,"ওলামায়ে কেরাম এই বিষয়ে সবাই ঐকমত্য পােষণ করেছেন দুর্বল হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য।"<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃআল্লামা ইমাম নাওয়াবী,আরবাঈন:১/৪২পৃষ্ঠা<br />   <br /> দলীল নং-১৩ আল্লামা ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি رضي الله عنه  বলেন,<br /> -“মুহাদ্দিস ও অন্যান্য ওলামাদের বক্তব্য হলাে দুর্বল সনদ সম্পর্কে অথবা কিছু ছাড় দেওয়া এভাবে যে মওদু বা বানােয়াট না হয়, তা ফাযায়েল আমল এবং অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে আমল করা বৈধ আছে। যদি তা আহকাম ও আকায়েদের সাথে সম্পর্ক<br /> হয়, যে ইমামগণ এ মত পােষণ করেছেন, তাঁদের মধ্যে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল رضي الله عنه, ইমাম ইবনে মাহদী رضي الله عنه, ইমাম ইবনুল মােবারক رضي الله عنه সংযুক্ত আছেন। তারা বলেন যে, আমরা হালাল হারামের মধ্যে হাদিস বর্ণনা করতে গিয়ে কঠিনতা অবলম্বন করেছি এবং ফাযায়েল বর্ণনার ক্ষেত্রে তা অবলম্বন করেছি।"<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃআল্লামা ইমাম আব্দুর রহমান জালালুদ্দিন সূয়ুতি, তাদরীবুর রাবী,১/৩৫১পৃ.<br /> <br /> দলীল নং-১৪ আল্লামা ইমাম নাওয়াবী رضي الله عنه বলেন ,“মুহাদ্দিসীনে কেরাম ও ফুকাহায়ে কেরাম এবং অন্যান্য ওলামায়ে কেরাম বলেছেন ফাযায়েল বা উৎসাহিত করা ও ভয়ভীতি প্রমাণ বা গ্রহণ করা হাদীসে দ্বঈফ দ্বারা জায়েজ আছে যদি তা জাল বর্ণনা বা জাল হাদিস না হয়।'<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ আল্লামা ইমাম নাওয়াবী,কিতাবুল আযকার,১/৮পৃ.,দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ,বয়রুত,লেবানন<br /> <br /> <div> দলিল নং-১৫ঃ আল্লামা ইমাম বুরহানুদ্দিন ইবরাহীম হালবী (রাহমাতুল্লাহি আলায়হি) বলেন,<br /> -“গােসল বা ওজুর পরে রুমাল দ্বারা শরীর মুছাহ মুস্তাহাব। হযরত আয়েশা رضي الله عنه   বর্ণনা করেন, হুযুর ﷺ এর একটি কাপড়ের টুকরা ছিল যা দ্বারা ওযুর পরে অঙ্গ মােবারক মাসেহ করিতেন। উক্ত হাদিস ইমাম তিরমিযী رضي الله عنه দুর্বল বলেছেন। এরপরেও উহার আমল বিদ্যমান আছে।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃআল্লামা ইমাম ইবরাহিম হালবী,গুনিয়াতুল মুসল্লি ৫২পৃ.<br /> <br /> দলীল নং- ১৬ আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী رضي الله عنه বলেন, “দ্বঈফ হাদিস ফাযায়েলে আমলের মধ্যে আমল করার ব্যাপারে ইমামগণের ঐকমত্য হইয়াছে ।এই জন্য আমাদের ইমামগন বলেছেন গর্দান মাসেহ করা মুস্তাহাব অথবা সুন্নাত প্রমাণিত হয়েছে।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী,মওজু আতুল কবীর ১/৩১৫ পৃ ৪৩৩<br /> <br /> দলীল নং-১৭ আল্লামা মােল্লা আলী কারী رضي الله عنه অন্যস্থানে বলেন<br /> -“ দ্বঈফ সনদের হাদিস (মওদু বা জাল নয়) ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃআল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী,মেরকাত ২/২০৬ পৃ.,হাদিস ৫২১<br /> <br /> দলীল নং- ১৮ আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী رضي الله عنه অন্যত্র বলেন,<br /> -“নিশ্চয় জেনে রাখুন! দুর্বল সনদের হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য। গ্রহণযােগ্য।<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃআল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী,মেরকাত ৩/৪৯,কিতাবুস সালাত,হাদিস :৯৭৪<br /> <br /> দলীল নং-১৯ঃ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী <span style="font-family: sans-serif;">رضي الله عنه  বলেন,"</span>ইমাম মুহাদ্দিস ঐকমত্য পােষণ করেছেন যে, ফাযায়েলে আমলের জন্য উফ বা দুর্বল হাদিস দ্বারা আমল করা বৈধ।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃআল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী,মেরকাত ৩/৪৯,কিতাবিস সালাত,হাদিস :১১৭৩<br /> <br />  দলীল নং- ২০ আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী رضي الله عنه  আরও বলেন,হাদিসটি দুর্বল, তবে ফাজায়েলের জন্য এবং আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃআল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী, মিরকাত ৩/৮৯৯পৃ.,কিতাবুস সালাত,হাদিস:১১৮৪<br /> <br />  দলীল নং- ২১ আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী رضي الله عنه বলেন,<br /> -“দ্বঈফ হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য , তা ব্যতিত অন্য বিষয়ের জন্য নয়। এই কথার মর্ম হচ্ছে তার বর্ণনা যদি একক হয়, একাধিক সনদে বর্ণিত যে হাদিস তা হাসানের অন্তর্ভূক্ত, তা তখন দ্বঈফের অন্তর্ভুক্ত নয়।"<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃআল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিস,মুকাদ্দামাতুশ শায়খ,২৩পৃ.<br /> <br /> দলীল নং- ২২-২৩ আল্লামা মােল্লা আলী কারী رضي الله عنه  বলেন,<br /> -“সমস্ত ওলামায়ে কেরাম ঐকমত্য পােষণ করেছেন যে দ্বঈফ হাদিস ফযিলতপূর্ন আমল এর ক্ষেত্রে গ্রহণযােগ্য।<br /> তথ্যসূত্রঃআল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী, মিরকাত ৩/৩৪০,বাব:সাহরি কিয়ামে রামাদ্ধান,হাদিস ১৩২৯<br /> আল্লামা মােল্লা আলী কারী رضي الله عنه  অন্য জায়গায় আরাে বলেন ,<br /> -“দ্বঈফ হাদীসের উপর আমল করা জায়েয বা বৈধ।”<br /> তথ্যসূত্রঃআল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী, মিরকাত,৩/৩৫০,হাদিস ১৩০৮<br /> <br /> দলীল নং-২৪<br /> আল্লামা ড.মাহমুদ আত্- হান বলেন : দুর্বল হাদিসের উপর আমলের ব্যাপারে ইখতিলাফ (মত পার্থক্য) রয়েছে। তবে জমহুর (অধিকাংশ) ইমাম ও ওলামার মতে দ্বঈফ হাদিস ফাযায়েলে আমলের ক্ষেত্রে আমল করা মুস্তাহাব। "<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃআল্লামা ডঃমাহমুদ জাহান,তাইসীরুল মাস্তালিউল হাদিস,৪৪পৃ:<br /> <br /> দলীল নং- ২৫ আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী  رضي الله عنه   বলেন,<br /> -“হাদীসের সনদে কোন বর্ণনাকারী অজানা বা অচেনা হওয়া অথবা হাদীসের কোথাও স্পষ্ট না হওয়া দ্বারা হাদিসটি মওদু বা বানােয়াট বিবেচিত হয় না। তবে হ্যা, দ্বঈফ বলা যেতে পারে। অতএব দ্বঈফ হাদিস অনুসারে ফযিলত বর্ণনার ক্ষেত্রে এবং আমল করা যাবে।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ  আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী,ফাযায়েলে নিসফিস শা'বান,৪৪পৃ:<br /> <br /> দলীল নং- ২৬<br /> আল্লামা আযলুনী   رضي الله عنه  হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর   رضي الله عنه  এর বর্ণিত ঘাড় মাসেহ এর হাদিস প্রসঙ্গে বলেন<br /> -“উক্ত হাদিসটির সনদ দুর্বল,  তবে হাদিসটি দ্বারা প্রমাণিত হলাে ঘাড় মাসেহ করা মুস্তাহাব অথবা সুন্নাত।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃআল্লামা আযলুনী,কাশফুল খাফা ২/১৮৬,হাদিস ২২৯৮<br /> <br /> দলীল নং-২৭ আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী <span style="font-family: sans-serif;">رضي الله عنه </span>বলেন, এ হাদিসের উপর আমল করা বৈধ, কেননা হাদিসের সনদ দুর্বল, মুরসাল, মুনকাতে হলেও আমল করা বৈধ,আর এ ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন,যেমনটি ইমাম নাওয়াবী رضي الله عنه  বলেছেন।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী,মিরকাত ২/৪৭৭পৃ.,হাদিস ৫২১,দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ,বয়রত লেবানন<br /> <br /></div> <div> দলীল নং- ২৮ তিনি এ কিতাবে আরও উল্লেখ করেন<br /> -“এ হাদিসটি শাফেয়ী মাযহাবের অনূকুলে,তবে হাদিসটি দ্বঈফ। তবে তা শুধু ফাযায়েলে আমালের জন্যই গ্রহনযােগ্য।<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ<span style="font-family: sans-serif;">আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী,মিরকাত ৩/১২২৩পৃ.,হাদিস ১৭০৮</span><br /> <span style="font-family: sans-serif;"><br /></span> দলীল নং- ২৯ তিনি আরও বলেন<br /> “নিশ্চয় এ হাদিসটি দ্বঈফ,আর যা ফাযায়েলে আমালের জন্য গ্রহনযােগ্য।<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ<span style="font-family: sans-serif;">আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী,মেরকাত ১/২৮২পৃ.</span><br /> <span style="font-family: sans-serif;"><br /></span> দলীল নং- ৩০ঃতিনি তাঁর এ কিতাবে অন্যস্থানে তাকিদ দিয়ে বলেন,<br /> -জেনে রাখুন নিশ্চয় দ্বঈফ সনদের হাদিস ফাযায়েলে আমালের জন্য গ্রহনযােগ্য।<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ <span style="font-family: sans-serif;">আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী,মেরকাত ২/৭৭৩</span><br /> <span style="font-family: sans-serif;"><br /></span>  দলীল নং- ৩১<br /> হুবুহু তিনি এ কিতাবের অন্যস্থানে বলেন এ রুপ বলেছেন।<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ <span style="font-family: sans-serif;">আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী,মেরকাত ৩/১২২৭ পৃ.,হাদিস ১৭১৬</span><br /> <span style="font-family: sans-serif;"><br /></span>  দলীল নং- ৩২ঃ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী رضي الله عنه   বলেন, যখন বুঝা গেল হাদিসটি দ্বঈফ,তাই তা শুধু ফাযায়েলে আমলের এ গ্রহনযােগ্য।<br /> দলীল নং- ৩৩ তিনি আরও বলেন,<br /> -“সবাই এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে,দ্বঈফ সনদের হাদিস ফাযায়েলে আমালের জন্য গ্রহনযােগ্য।<br /> দলীল নং- ৩৪ তিনি আরও লিখেন,<br /> -“ইমাম ইবনে হাযার মক্কী  رضي الله عنه  বলেন  "নিশ্চয় দ্বঈফ সনদের হাদিস ফাযায়েলে আমালের জন্য গ্রহনযােগ্য"।<br /> দলীল নং- ৩৫ তিনি এ কিতাবে আরও বলেন,<br /> -“ফাযায়েলে আমালের জন্য দ্বঈফ সনদের হাদিসই যথেষ্ট।<br />  দলীল নং- ৩৬ তিনি অন্যস্থানে বলেন<br /> -“নিশ্চয় এ সনদটি দুর্বল,তবে এটি ফাযায়েলে আমালের জন্য গ্রহনযােগ্য।<br />  দলীল নং-৩৭ আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী رضي الله عنه  বলেন-ঃদ্বঈফ সনদের উপর আমালের ব্যাপারে জমহুর মুহাদ্দিসগন বলেছেন যে,ঈফ হাদিস ফাযায়েলে আমালের জন্য গ্রহনযােগ্য।<br /> দলীল নং- ৩৮ আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী رضي الله عنه বলেন,<br /> -“নিশ্চয় দ্বঈফ হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহনযােগ্য। সর্বশেষ বলতে চাই উপরের আলােচনা থেকে বুঝলাম যে সকল ইমাম ও মুহাদ্দিসগন একমত পােষন করেছেন দ্বঈফ হাদিস ফাযায়েলে আমালের জন্য গ্রহনীয় এবং মুস্তাহাব।<br /> <br /></div> <br /> <br /> <br /> <br /> <br /> <br /> <br /> <br /> <br />

দ্বঈফ হাদীসের উপর আমল করা মুস্তাহাব

দ্বঈফ হাদীসের উপর আমল করা মুস্তাহাব। দ্বঈফ বা দুর্বল হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযােগ্য তাতে মুহাদ্দিসীনগন ঐকমত্য পােষণ করেছেন । ইলমে হাদ...

Read more »

মুহাদ্দিসগনের দৃষ্টিতে দ্বঈফ হাদিস

হাদিসটি সহিহ নয়” বলতে মুহাদ্দিসগণের দৃষ্টিতে কী বুঝায়?<br /> হাদিসের নামে জালিয়াতি' বইয়ের ১৭৪ পৃষ্ঠায় লেখক ড.আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর কোন প্রমান ছাড়াই মুহাদ্দিসদের উক্তি "হাদিসটি সহিহ নয়" বলতে জাল হাদিস বলে উল্লেখ করেছে। তার কাছে আমার প্রশ্ন যে,হাদিস শাস্ত্রের ভূয়া এই নীতি কোন মুহাদ্দীসের!!অবশ্যই কোন মুহাদ্দিসের নয়। তা না হলে সে কেন এক দলীলও উল্লেখ করতে পারেনি। এটা দ্বারাই প্রমানিত হয় যে,এটা কোন মুহাদ্দীসের মন্তব্য নয়; বরং তার নিজের মনগড়া বক্তব্য। অপরদিকে  জুনাইদ বাবুনগরী লিখিত আরেকটি বিভ্রান্তিকর বই প্রচলিত জাল হাদিস” এর ৪৯  পৃষ্ঠায় প্রমানহীনভাবে কোন মুহাদ্দিসদের উক্তি হাদিসটি সহিহ নয়’ বলতে জাল হাদিস বুঝায় বলে বুঝানাের অপচেষ্টা চালিয়েছেন। তাই আমি উক্ত হাদীসের নীতিমালার জন্য অনেক কষ্ট করে তথ্য সংগ্রহ করলাম এবং নিম্নে উপস্থাপন করলাম।<br /> <br /> হাদিস তিন প্রকার। ১, সহিহ, ২. হাসান, ও ৩, দ্বঈফ। এগুলাে হাদীসেরই অন্ত ভূক্ত। বর্ণনার সূত্রানুসারে এভাবে হাদিস-বিশারদগণ হাদীসের প্রকারভেদ করেছেন। আমাদের দেশে বা বিভিন্ন অঞ্চলে এক শ্রেণীর নামধারী আলিম মনগড়াভাবে হাদিস শাস্ত্রের মূলনীতিকে সম্পূর্ণরুপে উপেক্ষা করে হাদিস-ই-দ্বঈফকে হাদিস বলেই স্বীকার করতে রাজি নয়।অথবা দলীল হিসেবে এ পর্যায়ের হাদিসকে অগ্রহণযােগ্য বলার অপপ্রয়াস চালায়। অথচ হাদিস বিশারদদের মতে দ্বঈফও হাদিস হিসেবে গন্য। সনদের দিক দিয়ে দুর্বল হবার কারণে, এ পর্যায়ের হাদিস দিয়ে কোন আমল ওয়াজিব বা সুন্নাত প্রমাণ করা না গেলেও, এমন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত বাক্য সাওয়াবদায়ক হওয়াতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। যা সামনে বিস্তারিত আলােকপাত করা হবে। অনুরূপ কোন হাদীসের ব্যাপারে যদি কোন মুহাদ্দিস এ হাদিস সহিহ নয় বলে মন্তব্য করেন, তবে এতদভিত্তিতে ওই হাদিসকে অসত্য ও বানােয়াট হাদিস হিসেবে বিবেচনা করার সুযােগ নেই। কারণ সহিহ না হলে হাসান বা দ্বঈফ পর্যায়েরও হতে পারে।<br /> <br /> হাদিস-ই-সহিহ হল হাদীসের বচন ও সূত্রের মধ্যে কোনরূপ ক্রুটিবিচ্যুতির উর্ধ্বে, এমন হাদিস। সুতরাং কোন হাদিস সহিহ নয় বলে মন্তব্যকে পুঁজি করে, ওই হাদিসকে মিথ্যা হাদিস (মাওজু) বলার সুযােগ নেই। | জবাবে আমি গ্রহণযােগ্য মুহাদ্দিসদের ভাষ্য নিম্নে তুলে ধরলাম।<br /> <br /> দলিল নং -ঃ১<br /> বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম হাফেয ইবনে হাজর আসকালানী رضي الله عنه “আল কৃওলুল মুসাদ্দাদ ফিয যুব্বি আন মুসনাদি আহমদ" নামক কিতাবে করেছেন যে,“হাদিসটি সহিহ নয় বললে, সেটা মাওদু বা বানােয়াট হাদিস হওয়া অপরিহার্য নয়।" (১/৩৭ পৃষ্ঠা,মাকতাবায়ে ইবনে তাইমিয়া,কাহেরা,মিশর)<br /> <br /> দলীল নং-২ঃ<br /> হাদিস সম্পর্কে ইমাম শামসুদ্দীন যাহাবী رضي الله عنه সর্বোপরি এ মন্তব্য  করেছেন যে, "হাদীসের বচনগুলাে বা (মতন) সহিহ নয়। এ কথা দ্বারা বুঝ হাদিসটি দ্বঈফ বা দুর্বল পর্যায়ের (সূত্রের বা বচনের দিক দিয়ে)।"<br /> তথ্যসূত্রঃ আল্লামা ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী<span style="font-family: sans-serif;"> </span><span style="font-family: sans-serif;">رضي الله عنه</span> : তাকিত আলাল মওআত, পৃ-২৪৫<br /> <br /> দলীল নং- ৩<br /> বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী  رضي الله عنه এ প্রসঙ্গে বলেন:-<br /> -“এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই কোন মুহাদ্দিস "হাদিসটি সহিহ নয়" বললে সেটার দ্বারা হাদিসটি বানােয়াট হওয়া অপরিহার্য হবে।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ মােল্লা আলী কারী,আসরারুল মারফুআত,পৃ-১/১০৮পৃ. হাদিসঃ৮৫, মুয়াসাতুর রিসালা,বয়রুত,লেবানন।<br /> <br /> দলীল নং- ৪<br /> উক্ত কিতাবে মােল্লা আলী কারী رضي الله عنه তিনি আশুরার দিন সুরমা লাগানাের বিষয়ে একটি বর্ণিত হাদিস সম্পর্কে হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল  رضي الله عنه এর উক্তি "এ হাদিস সহিহ নয়" বলে মন্তব্য করার পর লিখেছেন, -“আমার (মােল্লা আলী কারী رضي الله عنه কথা হল এ "হাদিসটি সহিহ নয়" মানে বানােয়াট বা মাওজু নয়। সর্বশেষ দ্বঈফ বলা যায় মাত্র।"<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ আল্লামা মােল্লা আলী কারী<span style="font-family: sans-serif;"> رضي الله عنه, </span>আসরারুল মারফত,: ১/৪৭৪পৃ. মুয়াসাতুর রিসালা,বয়রুত,লেবানন।<br /> <div> <br /></div> দলিল নং ৫ঃ-<br /> বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম হাফেয ইবনে হাজর আসকালানী  رضي الله عنه বলেন,<br />  -“কোন হাদিসের ব্যাপারে মুহাদ্দিসদের বক্তব্য (এ হাদিসটি সুদৃঢ় নয়) বললে, হাদিসটি মাওজু বা বানােয়াট বলে প্রমাণিত হয় না। কারণ সাবিত বা প্রমাণিত শব্দ দ্বারা শুধু সহিহ হাদিসই বুঝায় এর নিম্ন পর্যায়ের হাদিসের মধ্যে দ্বঈফও রয়েছে।”<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ আলামা তাহের পাটনী : তাযকিরাতুল মামাত, ৭৫ পৃষ্ঠা<br /> <br /> দলীল নং- ৬-৭<br /> শুধু তাই নয় দেওবন্দীদের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি  আব্দুল হাই লাক্ষনৌভি বলেনঃ “ইমাম আহমদের উক্তি হাদিসটি সহিহ নয়’ বলার দ্বারা হাদিসটি বাতিল বা | জাল হওয়া অপরিহার্য নয়"। শুধু তাই নয় দেওবন্দের অনুসারী পাকিস্তানের  সরফরায খান  "নুর আওর বাশারের" ৫৪ পৃষ্ঠায়ও তার এ ইবারতটি সংকলন করেছেন।<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ  আব্দুল হাই লাক্ষনেীতি : আসারুল মারফু'আ, ১/পৃষ্ঠা-১০১<br /> <div> <br /></div> দলীল নং- ৮ একটি হাদিস শরীফ এও রয়েছে:-<br /> -“খাওয়ার পূর্বে তরমুজ খেলে তা পেটকে একেবারেই পরিষ্কার করে দেয় এবং রােগ ব্যাধিকে সমূলে দূরীভূত করে দেয়।" এ হাদীসের ব্যাপারে ইমাম ইবনে আসাকীর   رضي الله عنه বলেছেন,  (এটি শায বিরল পর্যায়ের সহিহ নয়) আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী  رضي الله عنه আলােচ্য হাদিস সম্পর্কে উপরােক্ত মন্তব্য সম্পর্কে লিখেছেন, -“এ কথা স্পষ্ট যে, ইবনে আসাকির   رضي الله عنه 'র উল্লিখিত মন্তব্য দ্বারা হাদিসটি মাওদ্বু বা বানােওয়াট নয়"<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ ১)আল্লামা মােল্লা আলী কারী<span style="font-family: sans-serif;">رضي الله عنه, </span>আসরারুল মারকাত, ১/৪৮৬ পৃ.পৃষ্ঠা<br /> ২)আল্লামা আযলুনী <span style="font-family: sans-serif;">رضي الله عنه: </span>কাশফুল আফা১/২৫৬পৃষ্ঠা, হাদিস : ৯০৮<br /> <br /> <div> <div> দলীল নং- ৯</div> <div> -“ইমাম কামালুদ্দীন মুহাম্মদ বিন হুমাম  رضي الله عنه  বলেন : কোন হাদিস সম্পর্কে কোন মুহাদ্দিস বলেছেন যে এ হাদিসটি সহিহ (বিশুদ্ধ) নয়, তাদের কথা সত্য বলে মান্য করা হলেও কোন অসুবিধা নেই, যেহেতু (শরীয়তের) দলীল বা প্রমাণ হিসেবে সাব্যস্ত হওয়ার জন্য শুধু (হাদিস) সহিহ বা বিশুদ্ধ হওয়া নির্ভরশীল নয়। সনদ বা সূত্রের দিক দিয়ে হাসান' হলেও (হাদিসটি শরীয়তের দলীল হিসেবে সাব্যস্ত হওয়ার জন্য) যথেষ্ট।"<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ  আল্লামা মােল্লা আলী কারী<span style="font-family: sans-serif;">  رضي الله عنه </span> : মিরকাতঃ ৩/৭৭, হাদিস : ১০৮<br /> <br /></div> <div> দলীল নং-১০ </div> <div>  -“ইমাম ইবনে হাজর মক্কী  رضي الله عنه বলেন, ইমাম আহমদ বিন হাম্বলের বক্তব্য হাদিসটি বিশুদ্ধ নয় এর অর্থ হবে সহিহ লিজাতিহী তথা জাতি বা প্রকৃত অর্থে সহিহ নয় উক্ত হাদিসটি (সনদের দিক দিয়ে) হাসান লিজাতিহী বা অন্য সনদে হাসান লিগায়রিহী (জাতিগত সহিহ না হওয়া; সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সহিহ'র কারনে নিজে সহিহ হওয়া)হওয়াকে মানা (নিষেধ) করে না। আর হাসান লিগায়রিহীও (শরিয়তের) প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা যায়। যা ইলমে হাদিস তথা হাদিস শাস্ত্র হতে জানা যায়।"<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ ইবনে হাজার মক্কী<span style="font-family: sans-serif;"> </span><span style="font-family: sans-serif;">رضي الله عنه </span>আস সাওয়ায়েকুল মূহরিকা, ২য় খন্ড, পৃ-৫৩৬ মুয়াসসাতুুর রিসালা,বরকত,লেবানন।</div> <div> <br /></div> <div> <div>  দলীল নং-১১:<br />  প্রসিদ্ধ একটি হাদিস আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস  رضي الله عنه  হতে বর্ণিত,</div> <div>  -“আমি ইলমের শহর আর আলী তার দরজা"। উক্ত হাদিসটি সম্পর্কে আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী رضي الله عنه  বলেন,</div> <div> -“ইমাম ইবনে হাযার আসকালানী  رضي الله عنه কে উক্ত হাদিস সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, উক্ত হাদিসটি সহিহ নয়,'হাসান' পর্যায়ের হাদিস। ইমাম হাকিম  رضي الله عنه বলেন হাদিসটি জাল বা বানােওয়াট নয়। তাই সুস্পষ্ট বুঝা যায় হাদিসটি সহিহ নয় বলতে “হাসান” হওয়াকে বুঝায়।<br /> <br />  তথ্যসূত্রঃ ১)মােল্লা আলী ক্বারী رضي الله عنه: আসরারুল মারআহ : ১/১১৮ পৃ.হাদিস:৭১,মুয়াসসাতুর রিসালা,বয়রুত।<br /> ২)মােবারকপুরী ঃ তুহফাতুল আহওয়াজি : ১০/২২৬, হাদিস নং : ৩৭২৩<br /> ৩)আযলুনী : কাশফুল খাফা : ১/১৮৪-৮৫ : হাদিস : ৬১৮<br /> ৪)ইমাম সাখাভী<span style="font-family: sans-serif;"> رضي الله عنه</span>: মাকাসিদুল হাসানা ঃ ১২১ পৃ. হাদিস নং : ১৮৯<br /> ৫)মােল্লা আলী কারী<span style="font-family: sans-serif;">رضي الله عنه</span><span style="font-family: sans-serif;">:</span>মিরকাতুল মাফাতিহ : ১১/২৫৩, হাদিস নং : ৬০৯৬<br /> <br /></div> <div> দলিল নং-১৯ঃ<br /> <br /></div> <div> উক্ত হাদিস সম্পর্কে ইমাম আযলুনী ও মােল্লা আলী কারী  رضي الله عنه বর্ণনা করেন,</div> <div> -“তবে ইমাম সুয়ূতি   رضي الله عنه তার রিযাল গ্রন্থ ‘আদ দুররুল মানসুর’ এ হযরত আবুল সাঈদ আ’লায়ী  رضي الله عنه  এর কওল বর্ণনা করেন, তিনি বলেন- উক্ত হাদিসটি একাধিক তরীকায় বর্ণিত হওয়ার কারণে “হাসান হাদিস, তাই হাদিসটি সহিহও নয় এবং দ্বঈফও নয়।”</div> <div> দিবালােকের ন্যায় পরিস্কার হয়ে গেল হাদিসটি সহিহ নয় বলতে "হাসান" পর্যায়ের হাদিস বুঝায়, মওদু নয়।<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ ১)আল্লামা আলুনী কাশফুল খাফা<span style="font-family: sans-serif;">   رضي الله عنه </span>: ১/১৮৫: হাদিসঃ ৬১৮<br /> ২)মােল্লা আলী কারী <span style="font-family: sans-serif;">رضي الله عنه</span><span style="font-family: sans-serif;"> :</span>আসরারুল মারফুআহ: ১/১১৯ পৃ.হাদিস:৭১,মুয়াসাতুর রিসালা,বয়রুত।<br /> <div> <br /></div> <br /></div> </div> </div> <div> <div> শুধু তা-ই নয়, আহলে হাদীসের কথিত মুহাদ্দিস নাসিরুদ্দীন আলবানী তার “সিলসিলাতুল আহাদিসুদ-দ্বঈফা” গ্রন্থের ১ম খণ্ডের ১০২ পৃষ্ঠার ৭৩ নং হাদীসে রাসূল  ﷺ এর নাম মােবারক শুনে চুমু খাওয়া হযরত আবু বকর  رضي الله عنه এর বর্ণিত হাদিস প্রসঙ্গে বলেন, "হাদিসটি সহিহ পর্যায়ের নয়"। বুঝা গেল, হাদিসটি জাল বা বানােয়াট নয়। কারণ আলবানী জাল হাদিসকে সরাসরি " মওজু" বলে উল্লেখ করে। কিন্তু এখানে তিনি এই শব্দ ব্যবহার করেছেন, অপরদিকে দলীল পেশ করে</div> <div> -“আল্লামা তাহের পাটনী তার “তাযকিরাতুল মাওদুআত” এর বলেন, হাদিসটি সহিহ পর্যায়ের নয়, যেমনিভাবে আল্লামা শাওকানী “ফাওয়াহিদুল মাওদুআত” এর ৯ পৃষ্ঠায় এবং ইমাম সাখাভী رضي الله عنه “মাকাসিদুল হাসানা” গ্রন্থে বর্ণনা করেন হাদিসটি সহিহ পর্যায়ের নয়।”<br /> <br /></div> <div> দলীল নংঃ-২১</div> <div> আহলে হাদিসদের অন্যতম আলেম মাওলানা মুহাম্মদ শামসুল হক আযীমাবাদী (মৃত্যু ১৩২৯হি.) বলেন,</div> <div> -“হাদিসটি দৃঢ় নয় বা সহিহ নয় বক্তব্য দ্বারা হাদিসটি দুর্বল হওয়া অপরিহার্য নয়। তাই হাদিসটি এ বা দৃঢ় এর দ্বারা সহিহ (উচ্চ পর্যায়ের বিশুদ্ধ) বুঝানাে হয়েছে। তাই বলে “হাসান” হওয়াকে নিষেধ করে না। তারপর আর একটু নিচে গেলেও এ নয় শব্দ দ্বারা একক সহিহ অথবা হাসান হওয়াকে নিষেধ করা হয় বলে, সহিহ, হাসান, দ্বঈফ (সবগুলােকে) নিষেধ করা হয় নি।”</div> </div> <div> <br /></div> <div> <br /></div> <div> <div> কোন মুহাদ্দিসের বক্তব্য হাদিসটি সহিহ নয় অথবা দৃঢ় নয় বক্তব্য দ্বারা হাদিসটি মওজু বা জলে অথবা বদ হওয়া অপরিহার্য নয়। কমপক্ষে সর্বনিম্ন দুর্বল বলা যেতে পারে।<br /> <br /> আল্লামা মোল্লা আলি ক্বারী رضي الله عنهবলেন,হাদিসটি সহ নয় (সহিহ হওয়াকে নিষেধ) বলতে মওজু বা জাল হওয়া অপরিহার্য নয়। আল্লামা ইবনে হযার আসকালানী رضي الله عنه বলেন, হাদিসটি  'সহিহ না কারও বক্তব্য দ্বারা মওজু বা জাল হওয়া অপরিহার্য নয়। কমপক্ষে হাসান নিলগাইরিহি হাদিস বলা যেতে পারে।"</div> <div> <br /></div> <div> আল্লামা ইবনে হাযার আসকালানী رضي الله عنه বলেন</div> <div>  -“হাদিসটি সহি নয় ৰা দৃঢ় নয় দ্বারা দ্বঈফ হওয়া অপরিহার্য নয় । । তাই বলে হাসান' হওয়াকে নিষেধ না অসুবিধা করে না।”(সিমউল মণ্ডত, ১৩৪ ২৩৫)<br /> <br /></div> <div> মােটকথা, হাদিস মাওধু বা বানােয়াট বুঝানাের জন্য তারা (বাতিল,মিথ্যা,বানােয়াট, সত্যায়নযোগ্য নয়,মনগড়া বানানাে) ইত্যাদি শব্দ বলতেন। সহিহ হওয়াকে অস্বীকার করা মানে বিশুদ্ধ সনদ হিসেবে শীর্ষ পর্যায়ের নয় বরং কিছুটা ত্রুটিপূর্ণ পন্থায়  বর্ণিত হাদিস। | আলােচ্য বক্তব্য থেকে এ কথা স্পষ্ট হয়েছে, হাদিস বুঝতে হলে শুধু বাহ্যিক শব্দ ও অনুবাদ বুঝা যথেষ্ট নয়, এক্ষেত্রে হাদিস বিশারদগণের পরিভাষা , উপস্থাপনা পদ্ধতি, বাচনভঙ্গি,সূত্র বর্ণনার নিয়ম-কানুন গ্রহনীয়-বর্জনীয় হওয়ায় হুকুম,ব্যক্তকরন পদ্বতি ইত্যাদি বুঝাও পূর্বশর্ত। কিতাব থেকে অনুবাদ পড়ে হাদিস বুঝা আদৌ সম্ভব নয়। | শুধু অনুবাদ বুঝা নয়, হাদীসের মর্মার্থ বুঝাই হল মূল জিনিস। কোন হাদিস সহিহ নয় মানে মাথা গরম করে জাল বলা যাবে না। হাদিস হহীহ নয় মানে হদিস বিশারদগণের পরিভাষায়, তিন প্রকারের হাদীসের মধ্যে ছহীহ হাড়া তাে হাসান ও দ্বঈফ হতে পারে।</div> </div> <div> <br /></div> <div> <br /></div> <br />

মুহাদ্দিসগনের দৃষ্টিতে দ্বঈফ হাদিস

হাদিসটি সহিহ নয়” বলতে মুহাদ্দিসগণের দৃষ্টিতে কী বুঝায়? হাদিসের নামে জালিয়াতি' বইয়ের ১৭৪ পৃষ্ঠায় লেখক ড.আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর কোন প্...

Read more »

বর্তমান আহলে হাদিসদের দৃষ্টিতে দ্বঈফ হাদিস বলতে কী বুঝায়?

বর্তমান আহলে হাদিসদের দৃষ্টিতে দ্বঈফ হাদিস বলতে কী বুঝায়?<br /> ১. বর্তমান আহলে হাদিস তথা সালাফিদের নিকট দ্বঈফ হাদিস হলাে এক প্রকার জাল হাদিস হিসেবে গন্য, যেমনটি আলবানীর অনেক পুস্তকে দৃষ্টি দিলে তা অনুধাবন করা যায়। পাঠকবৃন্দ! সকল মুহাদ্দীসিনে কেরাম একমত যে, দ্বঈফ সনদের হাদিসও হাদিসের এক প্রকারের অন্তর্ভুক্ত; সনদের রাবির আদালতের ক্ষেত্রে সহিহ, হাসান দ্বঈফ হয়ে থাকে। কিন্তু আলবানী ও তার উত্তরসূরীরা সকল ইমাম ও মুহাদ্দীসিনে কেরামের নীতিমালাকে উপেক্ষা করে, তারাই এক উসূলে হাদিসের নতুন পদ্ধতি আবিস্কার করেছে।<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ এ ব্যাপারে আপনাদের হাতের নাগালে একটি পুস্তক পাবেন, বইটির মূল লিখক হলাে শায়খ নাসিরুদ্দীন<br /> আলবানী যার অনুবাদ ও সম্পাদনা করেছেন বাংলাদেশের তথা কথিত আহলে হাদিস আবুল কালাম আযাদ।পুস্তকটির বাংলা নামকরন করা হয়েছে “ছহীহ হাদীছের পরিচয় ও হাদীছ বর্ণনার মূলনীতি " যা আযাদ বুক ডিপু, ১৯, শাহী জামে মসজিদ মার্কেট,আন্দরকিল্লা, চট্টগ্রাম হতে প্রকাশিত। এ বিষয়ে বইটির ২৩.২৫ ২৭পৃ.দেখতে পারেন।<br /> <br /> ২. অপরদিকে দ্বঈফ হাদিস যখন একাধিক সনদে বর্ণিত হবে তা আর দ্বঈফ থাকে না। এ মুহাদ্দিসীনে কিরামের নীতিমালাটি আহলে হাদিস সম্প্রদায় নিজেদের মতের পক্ষে যখন একটি দ্বঈফ সনদের হাদিসও আসবে তখন এটিকে 'হাসান' বলতে একটুও চিন্তা করবে না। আর নিজেদের মত ও পথের বিরােদ্ধে যখন একাধিক সনদ নয় বরং ১৭জন সাহাবি বর্ণনা করলেও তা তাদের নিকট দ্বঈফ সনদই থেকে যায়।<br /> <br /> তথ্যসূত্রঃ এ বিষয়ে আ'লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান বেরলবী رضي الله عنهএর সংকলিত ফতােওয়ায়ে আফ্রিকায় রাসূল ﷺ, হযরত আবু বকর رضي الله عنه ও হযরত উমর رضي الله عنهএকই মাটির সৃষ্টির হাদিসের আলােচনায় দেখতে পাবেন যে একটি জাল হাদিসকেও আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার হাদিসের নামে জালিয়াতি বইয়ে আলবানীর দলিলের ভিত্তিতে হাসান বলতে একটুও চিন্তা বা দ্বিধাবােধ করেননি। আবার আহলে হাদিস শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী আলেমের কলমের কালি শহীদের রক্তে চেয়ে প্রবিত্র ও যে সুরা ইখলাস তিনবার পড়বে সে যেন সম্পূর্ণ কুরআন পড়লাে এবং তােমরা মু'মিনের অন্তর দৃষ্টিকে ভয় কর, কেননা তারা আল্লাহর নূর দ্বারা দেখে এ হাদিসটি দ্বারা ওলীদের কাশফ প্রমানিত হয় বিধায় মােট দশ থেকে বেশী সাহাবি হতে বর্ণিত হওয়ার হওয়ার পরেও হাদিসটিকে সে দ্বঈফ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। অনুরুপ বহু উদাহারন আমার এ পুস্তকে পাবেন এবং আলবানীর জৰাৰে আমি অচিরেই শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী হাদিস শাস্ত্রেরের ভূয়া তাহকীককারী” বইটি প্রকাশের পথে সেখানে তার বিস্তারিত জবাব পাবেন।<br /> <div> <br /></div> ৩. অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, আলবানী ও তার উত্তরসূরীদের কোন সনদের একজন রাবি মজহুল (অপরিচিত) থাকলে তখন তাদের মওদু বা জাল হাদিস বলতে একটও চিন্তা ভাবনা করে না। আমার এ পুম্ভকের অনেক স্থানে আলবানী ও তার অনুসারীদের খন্ডন করেছি, এ কিতাবের বিভিন্ন স্থানে আলবানীর জবাব পাবেন, ইনশা আল্লাহ!<br />

বর্তমান আহলে হাদিসদের দৃষ্টিতে দ্বঈফ হাদিস বলতে কী বুঝায়?

বর্তমান আহলে হাদিসদের দৃষ্টিতে দ্বঈফ হাদিস বলতে কী বুঝায়? ১. বর্তমান আহলে হাদিস তথা সালাফিদের নিকট দ্বঈফ হাদিস হলাে এক প্রকার জাল হাদিস হি...

Read more »